ভলিবল কোর্টে যে ৫টি নিয়ম ভাঙলে আপনার দল হেরে যাবেই!

webmaster

배구 경기에서의 규칙 위반 사례 - An action shot of a male volleyball player in a blue jersey and athletic shorts, attempting a set. H...

আহ, ভলিবল! কোর্টের চারদিকে ছোটাছুটি, উঁচুতে লাফিয়ে উঠে ধুমধাড়াক্কা স্ম্যাশ – এই খেলার টানটা যেন অন্যরকম, তাই না? আমিও তো ঘন্টার পর ঘন্টা টিভির সামনে বসে থাকি বা মাঠে গিয়ে চেল্লাই, কখন যেন প্রিয় দলটা জিতে যায়। কিন্তু মাঝেমধ্যে এমন কিছু মুহূর্ত আসে যখন একটা ছোট্ট বাঁশি বা একটা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে খেলার পুরো মোড়ই ঘুরে যায়। তখন মেজাজটা যে কেমন হয়, তা শুধু একজন সত্যিকারের ভলিবল প্রেমীই বোঝেন।আমরা অনেকেই হয়তো ভেবে থাকি, ভলিবল তো সহজ খেলা, নিয়ম আর ক’টাই বা আছে?

배구 경기에서의 규칙 위반 사례 관련 이미지 1

কিন্তু সত্যি বলতে কী, খেলার মাঠে এমন কিছু সূক্ষ্ম নিয়মভঙ্গ হয় যা আমরা অনেকেই হয়তো খেয়ালই করি না বা ভুল বুঝে ফেলি। খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে যেমন হাত লেগে যাওয়া, সার্ভিস করতে গিয়ে পায়ের ফাউল, বা একই বলে দু’বার টাচ করা—এসব তো সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু আরও কিছু জটিল নিয়ম আছে যা খেলার গতিপথ বদলে দেয় এবং ম্যাচের ফলাফলকে সরাসরি প্রভাবিত করে।আসলে, এমন পরিস্থিতিতে আমরা অনেকেই রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলি। কিন্তু এই নিয়মগুলো আসলে কী, কেন এগুলোকে ফাউল ধরা হয়, আর কীভাবে খেলোয়াড়রা এসব ভুল থেকে বাঁচতে পারে?

এসব জানতে পারলে খেলাটা দেখতে যেমন আরও মজা লাগবে, তেমনই খেলার কৌশলও বোঝা যাবে আরও গভীরে। এমনকি আধুনিক ভলিবলে যে ধরনের গতি এবং কৌশলের ব্যবহার হয়, সেখানে এই নিয়মগুলো বোঝাটা আরও জরুরি হয়ে উঠেছে।আজকের এই লেখায়, ভলিবল খেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মভঙ্গ এবং সেগুলোর খুঁটিনাটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে আসা যাক।

ভলিবলে যে ভুলগুলো প্রায়ই হয়ভলিবল খেলতে গিয়ে আমরা অনেক সময়েই কিছু সাধারণ ভুল করে থাকি, যার ফলে পয়েন্ট প্রতিপক্ষের দিকে চলে যায়। এই ভুলগুলো সাধারণত আমাদের অসাবধানতার জন্য হয়ে থাকে। চলুন, সেই ভুলগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক:

ডাবল টাচ

ডাবল টাচ মানে হলো, একজন খেলোয়াড় যখন বলটিকে একটানা দুবার স্পর্শ করে। ভলিবলের নিয়মানুসারে, একটি হিটের মধ্যে একজন খেলোয়াড় একবারের বেশি বল স্পর্শ করতে পারবে না। প্রথম টাচ করার পর যদি মনে হয় বলটিকে আবার ধরতে হবে, তাহলে সেটি ফাউল হিসেবে গণ্য হবে। তবে, ব্লকিং করার সময় এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। কারণ ব্লকিং করার সময় একাধিক খেলোয়াড় একসঙ্গে বল স্পর্শ করতে পারে।

ক্যারি

ক্যারি হলো যখন কোনো খেলোয়াড় বলটিকে ধরে কিছুক্ষণ নিজের হাতে রাখে, যা নিয়ম বহির্ভূত। বলটিকে তাৎক্ষণিকভাবে হিট করতে হয়, ধরে রাখা যায় না। এই ভুলটা সাধারণত নতুন খেলোয়াড়দের মধ্যে বেশি দেখা যায়, যারা বল কন্ট্রোল করতে গিয়ে দ্বিধা বোধ করে।

লিফট

লিফট অনেকটা ক্যারির মতোই, যেখানে বলটিকে উপরের দিকে তোলার সময় আঙুল দিয়ে অতিরিক্ত বলের নিচে প্রবেশ করানো হয় বা বলটিকে সঠিকভাবে হিট না করে উপরে তোলা হয়। এতে হিটিংয়ের বদলে বলটিকে বহন করা হয়, যা ফাউল।

ফাউলের নাম বর্ণনা করণীয়
ডাবল টাচ এক খেলোয়াড় একটানা দুবার বল স্পর্শ করলে একবারে বল হিট করার চেষ্টা করুন
ক্যারি বল হাতে ধরে রাখলে তাৎক্ষণিকভাবে বল হিট করুন
লিফট আঙুল দিয়ে বলটিকে ভুলভাবে তুললে সঠিকভাবে হিট করুন

সার্ভিসের সময় সাধারণ ভুলগুলোসার্ভিস করার সময় কিছু সাধারণ ভুল হয়, যা পয়েন্ট হারানোর কারণ হতে পারে। একটা ভালো সার্ভিস প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙে দিতে পারে, তাই সার্ভিসের সময় আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।

ফুট ফল্ট

সার্ভিস করার সময় খেলোয়াড়ের পা অবশ্যই সার্ভিস লাইনের পিছনে থাকতে হবে। যদি পা লাইন স্পর্শ করে বা লাইনের উপরে থাকে, তবে এটি ফুট ফল্ট হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রতিপক্ষ দল পয়েন্ট পাবে।

সার্ভিসের ভুল স্থান

ভলিবলের নিয়ম অনুযায়ী, সার্ভিস করার সময় খেলোয়াড়কে অবশ্যই সার্ভিসের নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে থাকতে হবে। এই এরিয়ার বাইরে থেকে সার্ভিস করলে তা ফাউল হিসেবে ধরা হয়।

বল থ্রো করার ভুল

সার্ভিস করার সময় বল সঠিকভাবে থ্রো করতে হয়। যদি বল থ্রো করার সময় হাত থেকে পড়ে যায় বা থ্রো ঠিক না হয়, তবে রেফারি ফাউল কল করতে পারেন।নেট স্পর্শ করা : কখন এটা ফাউল?

ভলিবল খেলার সময় নেট স্পর্শ করা একটি সাধারণ ঘটনা, কিন্তু কখন এটি ফাউল হিসেবে গণ্য হবে, তা জানা খুবই জরুরি।

খেলোয়াড়ের শরীর দিয়ে নেট স্পর্শ

যদি কোনো খেলোয়াড়ের শরীরের কোনো অংশ (যেমন হাত, পা, বা অন্য কোনো অংশ) খেলার সময় নেটের সাথে স্পর্শ করে, তবে এটি ফাউল হিসেবে গণ্য হবে। তবে, যদি স্পর্শটি খেলার গতির সাথে জড়িত না থাকে, তাহলে রেফারি এটি উপেক্ষা করতে পারেন।

পোস্ট স্পর্শ করা

নেটের বাইরে থাকা পোস্ট স্পর্শ করা সাধারণত ফাউল হিসেবে ধরা হয় না, যতক্ষণ না এটি খেলার গতিকে প্রভাবিত করে। যদি কোনো খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে পোস্ট ধরে নিজেকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তবে রেফারি ফাউল কল করতে পারেন।

বলের দ্বারা নেট স্পর্শ

যদি বল মারার পরে নেট নড়ে এবং খেলোয়াড় অজান্তে নেট স্পর্শ করে, তবে সাধারণত এটি ফাউল হিসেবে ধরা হয় না।ব্যাক রো প্লেয়ারদের ভুলগুলোভলিবলে ব্যাক রো খেলোয়াড়দের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। এই নিয়মগুলো না মানলে ফাউল হতে পারে এবং বিপক্ষ দল পয়েন্ট পেয়ে যায়।

অ্যাটাক লাইনের ফাউল

ব্যাক রো খেলোয়াড়রা অ্যাটাক লাইনের সামনে থেকে অ্যাটাক করতে পারে না। যদি কোনো ব্যাক রো খেলোয়াড় অ্যাটাক লাইনের সামনে থেকে লাফিয়ে বল মারে, তবে সেটি ফাউল হিসেবে গণ্য হবে। তবে, অ্যাটাক করার সময় যদি খেলোয়াড়ের পা অ্যাটাক লাইনের পিছনে থাকে, তবে সেটি বৈধ হবে।

ব্লকিংয়ে ভুল

ব্যাক রো খেলোয়াড়রা সাধারণত নেটের কাছাকাছি গিয়ে ব্লকিং করতে পারে না। যদি কোনো ব্যাক রো খেলোয়াড় ব্লকিং করার সময় নেটের খুব কাছে চলে আসে বা ব্লকিং করার চেষ্টা করে, তবে সেটি ফাউল হিসেবে ধরা হয়।

লিবারোর ভুল

লিবারো খেলোয়াড়দের জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম আছে। তারা অ্যাটাক করতে বা ব্লকিং করতে পারে না। যদি কোনো লিবারো এই নিয়মগুলো ভাঙে, তবে সেটি ফাউল হিসেবে গণ্য হবে।পজিশনাল ফাউল এবং এর প্রভাবভলিবলে পজিশনাল ফাউল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিটি খেলোয়াড়কে সার্ভিসের সময় মাঠের নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকতে হয়। এই নিয়ম ভাঙলে প্রতিপক্ষ দল পয়েন্ট পায়।

সার্ভিসের সময় ভুল পজিশন

সার্ভিসের সময় খেলোয়াড়দের তাদের নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকতে হয়। যদি কোনো খেলোয়াড় ভুল অবস্থানে থাকে, তবে সেটি পজিশনাল ফাউল হিসেবে গণ্য হবে।

রোটেশনাল এরর

ভলিবলে প্রতিটি পয়েন্টের পর খেলোয়াড়দের একটি নির্দিষ্ট ক্রমে ঘুরতে হয়। যদি কোনো খেলোয়াড় ভুল ক্রমে ঘোরে, তবে সেটি রোটেশনাল এরর হিসেবে ধরা হয় এবং এর ফলে প্রতিপক্ষ দল পয়েন্ট পায়।

পজিশনাল ফাউলের প্রভাব

পজিশনাল ফাউলের কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রতিপক্ষ দল একটি পয়েন্ট পেয়ে যায়। তাই খেলোয়াড়দের নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়।রেফারি কখন কী ফাউল ধরেন, তা বুঝবেন যেভাবেরেফারি কখন কোন পরিস্থিতিতে ফাউল ধরেন, তা বোঝা খেলোয়াড় এবং দর্শকদের জন্য খুবই জরুরি। এতে খেলার নিয়মকানুন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়।

হাতের ইশারা

রেফারি বিভিন্ন ধরনের হাতের ইশারার মাধ্যমে ফাউল নির্দেশ করেন। উদাহরণস্বরূপ, ডাবল টাচের জন্য রেফারি দুইবার হাত দেখান, ক্যারির জন্য তালু উপরের দিকে ঘোরান।

বাঁশির ব্যবহার

ফাউল হলে রেফারি বাঁশি বাজিয়ে খেলা থামান। বাঁশির আওয়াজ শুনে খেলোয়াড়রা বুঝতে পারেন যে কোনো ফাউল হয়েছে।

অফিসিয়াল সিগন্যাল

আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশন (FIVB) কর্তৃক নির্ধারিত কিছু নির্দিষ্ট সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়, যা রেফারিরা ফাউল ঘোষণার সময় ব্যবহার করেন।নিয়ম ভাঙলে কী হয়?

배구 경기에서의 규칙 위반 사례 관련 이미지 2

ভলিবল খেলার সময় নিয়ম ভাঙলে কিছু নির্দিষ্ট পরিণতি হতে পারে, যা খেলোয়াড় এবং দলের উপর প্রভাব ফেলে।

পয়েন্ট পেনাল্টি

নিয়ম ভাঙলে সাধারণত প্রতিপক্ষ দল একটি পয়েন্ট পেয়ে যায়। এই পয়েন্ট পেনাল্টির কারণে খেলার মোড় ঘুরে যেতে পারে।

সার্ভিস পরিবর্তন

কিছু ফাউলের কারণে দলের সার্ভিসের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় এবং প্রতিপক্ষ দল সার্ভিস করার সুযোগ পায়।

সতর্কবার্তা ও বহিষ্কার

গুরুতর নিয়ম ভাঙলে রেফারি খেলোয়াড়কে সতর্ক করতে পারেন বা এমনকি খেলা থেকে বহিষ্কারও করতে পারেন। এই ধরনের ঘটনা দলের জন্য খুবই ক্ষতিকর হতে পারে।ভলিবলের নিয়মগুলো ভালোভাবে জেনে খেললে আশা করি আপনার খেলা আরও সুন্দর হবে এবং আপনি একজন ভালো খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।

লেখাটি শেষ করছি

বন্ধুরা, ভলিবল একটি দারুণ খেলা, যেখানে শেখার কোনো শেষ নেই। আমি নিজেও যখন প্রথম খেলতে শুরু করেছিলাম, তখন এই ছোটখাটো ভুলগুলো নিয়ে বেশ হিমশিম খেয়েছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন নিয়মগুলো বুঝতে পারলাম এবং সেগুলো খেলার সময় মনে রাখতে শুরু করলাম, তখন আমার খেলার মান অনেকটাই উন্নত হলো। সত্যি বলতে, প্রতিটি ভুলই শেখার একটি সুযোগ। যখনই কোনো ফাউল হয়, তখন একটু থামুন এবং ভাবুন কেন হলো। পরেরবার সেই ভুলটা না করার চেষ্টা করুন। এভাবে নিজের ভুল থেকে শেখাটা খেলার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আশা করি, আজকের এই আলোচনা আপনাদের ভলিবল খেলায় আরও উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, অনুশীলন আর নিয়মের সঠিক জ্ঞানই আপনাকে একজন ভালো খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলবে। এই টিপসগুলো মেনে চললে দেখবেন, প্রতিপক্ষের জন্য আপনি এক কঠিন প্রতিদ্বন্দী হয়ে উঠছেন। খেলাটাকে উপভোগ করুন আর ভুল থেকে শিখুন!

জেনে রাখুন কিছু দরকারী টিপস

১. ভলিবলে বল নিয়ন্ত্রণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমদিকে হয়তো বল আপনার কথা শুনবে না, কিন্তু নিয়মিত অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। আমি যখন প্রথম খেলতে শুরু করেছিলাম, তখন সার্ভ করার সময় বল যেখানে খুশি চলে যেত। কিন্তু প্রতিদিন নিয়ম করে কিছু সময় শুধু বল থ্রো করা, রিসিভ করা আর হিটিং প্র্যাকটিস করে আমার হাত আর চোখের সমন্বয় অনেক ভালো হয়েছে। এর ফলে ডাবল টাচ বা ক্যারি করার মতো ভুলগুলো এখন অনেকটাই কমে গেছে। মনে রাখবেন, পেশাদার খেলোয়াড়রাও ঘন্টার পর ঘন্টা বলের সাথে সময় কাটান শুধুমাত্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণকে নিখুঁত করার জন্য। আপনার হাতের স্পর্শ আর বলের গতিপথের সঠিক বোঝাপড়া তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগলেও, ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে আপনিও একদিন সফল হবেন। নিজেকে সময় দিন, প্রতিদিন ছোট ছোট টার্গেট সেট করে প্র্যাকটিস করুন এবং দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।

২. শুধুমাত্র নিজে খেললেই হবে না, অন্যদের খেলা দেখাও খুব জরুরি। বিশেষ করে পেশাদার ভলিবল ম্যাচগুলো যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে দেখেন, তাহলে অনেক নতুন কৌশল আর ট্যাকটিক্স সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি যখন টিভিতে বা অনলাইনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট দেখি, তখন খেলোয়াড়রা কীভাবে সেট করে, স্পাইক করে, বা ডিফেন্স করে – সেগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করি। এতে তাদের পজিশনিং, কমিউনিকেশন এবং ফাউল এড়ানোর কৌশলগুলো শেখা যায়। অনেক সময় দেখা যায়, ছোটখাটো কিছু ট্যাকটিক্যাল মুভ দিয়ে তারা খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়, যা আমি আগে কখনো ভাবিনি। এই ধরনের ম্যাচগুলো দেখে আমি নিজের খেলায় অনেক নতুন জিনিস প্রয়োগ করতে পেরেছি, যা আমার খেলাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। তাই, যখনই সুযোগ পাবেন, ভালো খেলোয়াড়দের খেলা দেখতে ভুলবেন না। এটা আপনার খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে এবং নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করবে।

৩. ভলিবল একটি দলগত খেলা, যেখানে প্রতিটি খেলোয়াড়ের মধ্যে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি দলের সদস্যরা একে অপরের সাথে ভালোভাবে কথা না বলে, তাহলে ভুল বোঝাবুঝি হয় এবং পয়েন্ট হারানোর সম্ভাবনা বাড়ে। আমি দেখেছি, যখন আমরা খেলার সময় একে অপরকে ‘আমার বল’, ‘তোমার বল’, ‘কভার করো’ – এসব ছোট ছোট নির্দেশনা দিই, তখন খেলাটা অনেক মসৃণ হয়। এতে কে কখন বল ধরবে বা কে কভার করবে, তা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকে না। অনেক সময় দেখা যায়, বল যখন নেটের কাছাকাছি আসে, তখন কে বলটা ধরবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়, যার ফলে বল নিচে পড়ে যায়। তাই, খেলার আগে থেকেই দলের সাথে যোগাযোগের একটি স্পষ্ট কাঠামো তৈরি করুন এবং খেলার সময় সেটা মেনে চলুন। মনে রাখবেন, ভালো যোগাযোগ শুধুমাত্র মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও আপনাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তোলে এবং একটি সফল দলের প্রধান চাবিকাঠি হলো একে অপরের প্রতি বিশ্বাস আর বোঝাপড়া।

৪. যেকোনো খেলা শুরু করার আগে শরীরকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা খুব জরুরি, আর ভলিবলের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। আমি দেখেছি, যারা ওয়ার্ম-আপ না করেই খেলতে নামে, তাদের পেশিতে টান লাগা বা অন্য কোনো আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ওয়ার্ম-আপ শরীরের রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়ায়, পেশিগুলোকে খেলার জন্য তৈরি করে এবং খেলার সময় আপনাকে আরও নমনীয় থাকতে সাহায্য করে। হালকা দৌড়ানো, স্ট্রেচিং করা, জয়েন্টগুলো ঘোরানো – এগুলো ওয়ার্ম-আপের জন্য খুব ভালো ব্যায়াম। অন্তত ১০-১৫ মিনিট ওয়ার্ম-আপ করার পর খেলা শুরু করলে দেখবেন, আপনি আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন এবং আপনার খেলার মানও উন্নত হচ্ছে। নিজের শরীরের যত্ন নেওয়াটা একজন ভালো খেলোয়াড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাই, আঘাত থেকে বাঁচতে এবং খেলার পূর্ণ আনন্দ উপভোগ করতে অবশ্যই ওয়ার্ম-আপকে গুরুত্ব দিন। মনে রাখবেন, সুস্থ শরীর ছাড়া কোনো ভালো খেলা সম্ভব নয়।

৫. ভলিবল খেলার সময় রেফারির সিদ্ধান্তগুলো বোঝা খেলোয়াড়দের জন্য খুব জরুরি। রেফারি তার হাতের ইশারার মাধ্যমে কোন ফাউল হয়েছে বা কোন দলের পয়েন্ট হয়েছে তা নির্দেশ করেন। আমি যখন প্রথম খেলতে শুরু করেছিলাম, তখন রেফারির অনেক ইশারাই বুঝতাম না, যার ফলে খেলার মাঝে মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন রেফারির প্রতিটি সংকেতের অর্থ বুঝতে পারলাম, তখন খেলার পরিস্থিতি বোঝা আমার জন্য অনেক সহজ হয়ে গেল। এতে খেলার প্রতি আরও মনোযোগ দিতে পেরেছি এবং কোনো ফাউল হলে দ্রুত বুঝতে পারতাম কেন হলো। FIVB-এর অফিসিয়াল নিয়মাবলীতে রেফারির প্রতিটি সংকেতের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। একটু সময় নিয়ে এগুলো দেখে নিলে দেখবেন, আপনার খেলার অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হচ্ছে। রেফারির সিদ্ধান্ত দ্রুত বুঝতে পারলে আপনি দলের জন্য সঠিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন এবং এতে আপনার দলের খেলাও আরও উন্নত হবে।

Advertisement

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এক নজরে

বন্ধুরা, আজকের আলোচনা থেকে আমরা ভলিবলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভুল এবং নিয়ম সম্পর্কে জানলাম। ডাবল টাচ, ক্যারি, লিফট, ফুট ফল্ট, নেট স্পর্শ করা, ব্যাক রো খেলোয়াড়দের নিয়ম এবং পজিশনাল ফাউল – এই সবগুলোই খেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ। একজন ভালো খেলোয়াড় হতে হলে এই নিয়মগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। আমি মনে করি, ভলিবল শুধু শারীরিক শক্তি আর দক্ষতার খেলা নয়, এটি বুদ্ধিমত্তা এবং নিয়মানুবর্তিতারও খেলা। প্রতিটি ফাউলকে শেখার সুযোগ হিসেবে নিন এবং নিজের খেলাকে ক্রমাগত উন্নত করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, সফলতার কোনো শর্টকাট নেই, নিয়মিত অনুশীলন আর নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধা আপনাকে একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন করে তুলবে। তাই, মাঠে নামার আগে আজকের আলোচনায় তুলে ধরা পয়েন্টগুলো একবার মনে করে নিন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং আপনি আরও ভালোভাবে খেলতে পারবেন। ভলিবলের আনন্দ আর উত্তেজনা পুরোপুরি উপভোগ করতে এই নিয়মগুলো আপনাকে ভীষণ সাহায্য করবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: ভলিবল খেলায় “চারবার বল স্পর্শ” করা বলতে কী বোঝায় এবং এটি কেন ফাউল?

উ: আরে, এই প্রশ্নটা খুব কমন! আসলে, ভলিবলে একটি দল প্রতিপক্ষের কোর্টে বল পাঠানোর আগে সর্বোচ্চ তিনবার বল স্পর্শ করতে পারে। এর বেশি যদি একবারও বলের গায়ে হাত লাগে, অর্থাৎ চতুর্থবার স্পর্শ হয়ে যায়, তাহলেই সেটাকে “চারবার বল স্পর্শ” ফাউল ধরা হয়। আমি নিজে অনেক খেলায় দেখেছি, যখন খেলোয়াড়রা দারুণ একটা র‍্যালি চালাচ্ছে, উত্তেজনা চরমে, তখন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বা সমন্বয়ের অভাবে ভুলবশত এই ফাউলটা হয়ে যায়। এটা দলের জন্য পয়েন্ট হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যা অনেক সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই নিয়মটা আসলে খেলাটাকে আরও দ্রুত এবং কৌশলগত রাখার জন্য। চিন্তা করুন, যদি যত খুশি ততবার বল ছোঁয়ার সুযোগ থাকত, তাহলে খেলাটা কতটা ধীরগতির হয়ে যেত!
তাই, তিনটি স্পর্শের সীমাবদ্ধতা খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং নির্ভুল পাস দেওয়ার ক্ষমতা বাড়াতে উৎসাহিত করে। ব্লকিংয়ের সময় অবশ্য বল স্পর্শ করলে সেটাকে একটি স্পর্শ হিসেবে ধরা হয় না, কিন্তু তারপরও দল আরও দুটি স্পর্শ করার সুযোগ পায়। আমার মনে হয়, খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে অনুশীলনের মাধ্যমে এই ভুলটা এড়ানো উচিত, বিশেষ করে চাপের মুহূর্তে।

প্র: সার্ভিসের সময় খেলোয়াড়দের পায়ের ফাউল কখন হয় এবং এর প্রভাব কী?

উ: সার্ভিস ফাউল, উফফ! এটা নিয়ে অনেক সময় বিতর্ক হতে দেখেছি। নিয়মটা কিন্তু একদম পরিষ্কার – সার্ভিসের সময় খেলোয়াড়কে কোর্টের পেছনের “সার্ভ লাইন” বা “বেসলাইন” এর বাইরে থাকতে হবে। যখন সার্ভার বলকে আঘাত করে, তখন তার পা যদি সার্ভ লাইনের উপর বা কোর্টের ভেতরে চলে আসে, তাহলেই সেটা পায়ের ফাউল হিসেবে গণ্য হয়। আমি নিজে দেখেছি, অনেক সময় খেলোয়াড়রা আরও বেশি শক্তি বা অ্যাঙ্গেল পাওয়ার জন্য সামান্য হলেও লাইনের উপর চলে আসে, আর রেফারি অমনি বাঁশি বাজিয়ে দেন!
এতে প্রতিপক্ষ দল একটি পয়েন্ট পায় এবং সার্ভ করার সুযোগও তাদের হাতে চলে যায়। একবার একটা টুর্নামেন্টে, শেষ পয়েন্টে এক খেলোয়াড়ের সার্ভ ফাউল হওয়ার কারণে পুরো ম্যাচটাই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। তখন খেলোয়াড়ের মুখটা দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। আসলে এই নিয়মটি খেলার ন্যায্যতার জন্য খুব জরুরি। সার্ভারের অতিরিক্ত সুবিধা নেওয়া আটকাতেই এই নিয়মটা রাখা হয়েছে। খেলোয়াড়দের উচিত সার্ভ করার সময় নিজের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে অনুশীলন করা।

প্র: ভলিবলে জালের স্পর্শ (নেট টাচ) ফাউল কখন ধরা হয়? এর কোনো ব্যতিক্রম আছে কি?

উ: জালের স্পর্শ বা নেট টাচ নিয়ে আমার তো মনে হয় বেশিরভাগ মানুষই ভুল বোঝে! সহজ করে বললে, খেলা চলাকালীন কোনো খেলোয়াড় যদি বলকে আঘাত করার সময় বা খেলার মধ্যে হস্তক্ষেপ করার সময় জাল স্পর্শ করে, তবে সেটি ফাউল হিসেবে ধরা হয়। তবে হ্যাঁ, এর কিছু ব্যতিক্রমও আছে। যেমন, বল আঘাত করার পর যদি কোনো খেলোয়াড় জালের পোস্ট বা জালের বাইরের দড়িতে স্পর্শ করে এবং তাতে খেলার কোনো প্রভাব না পড়ে, তাহলে সেটা ফাউল নয়। এছাড়াও, ব্লক করার সময় যদি হাত প্রতিপক্ষের কোর্টে জালের উপর দিয়ে চলে যায়, কিন্তু তাতে বলের খেলার কোনো ক্ষতি না হয়, তাহলে সেটা ফাউল নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি, অনেক সময় খেলোয়াড়রা স্ম্যাশ করতে গিয়ে বা ব্লক করার সময় গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে জালের সংস্পর্শে চলে আসে। তখন রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক সময় চিৎকার-চেঁচামেচিও হয়। এই নিয়মটা আসলে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা এবং খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। জাল বা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের কোনো ক্ষতি যাতে না হয়, সেই দিকটাও দেখা হয়। তাই, খেয়াল রাখবেন, শুধুমাত্র বল আঘাত করার সময় বা খেলাকে প্রভাবিত করার মতো পরিস্থিতিতে জাল স্পর্শ করলেই ফাউল হবে।

📚 তথ্যসূত্র