বন্ধুরা, খেলাধুলা তো আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাই না? ফুটবল আর ক্রিকেট নিয়ে যতটা আলোচনা হয়, অন্যান্য খেলা নিয়ে কি ততটা হয়? বিশেষ করে ভলিবল নিয়ে আমাদের দেশে বা আশেপাশে কতটা মাতামাতি হয়, তা কি আমরা সবাই জানি?

কখনো কি ভেবেছেন, কেন কোনো খেলা এক অঞ্চলে খুব জনপ্রিয়, আবার অন্য অঞ্চলে ততটা নয়? যেমন ধরুন, এই ভলিবলের কথাই যদি বলি, গ্রামাঞ্চলে বা মফস্বলে শীতকালে এর উন্মাদনাটা আমি নিজের চোখে দেখেছি, যা শহরে হয়তো খুব একটা চোখে পড়ে না। কিন্তু কেন এই ভিন্নতা?
সময়ের সাথে সাথে নতুন প্রজন্মের কাছে কি এর আবেদন কমছে, নাকি বাড়ছে? আমাদের দেশের ভলিবল ফেডারেশনের নানান চড়াই-উতরাই, আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়া, আবার অন্যদিকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর যে চেষ্টা চলছে, এসবের পেছনে আসল গল্পটা কী?
ভলিবলের আঞ্চলিক জনপ্রিয়তার পেছনের এই গভীর কারণগুলো আজ আমরা একে একে খুঁজে বের করব।
গ্রামের মাঠে ভলিবলের প্রতিচ্ছবি
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, গ্রাম বাংলায় ভলিবল যেন এক অন্যরকম ভালোবাসা নিয়ে টিকে আছে। শীতের সময় গ্রামের মেঠো পথে বা খোলা মাঠে সন্ধ্যার পর হারিকেন জ্বালিয়ে কিংবা বিদ্যুতের তার টেনে নিয়ে যে ভলিবল খেলা হয়, তার উত্তেজনাটা একদমই আলাদা। এখানে খেলার মাঠে দর্শকের ভিড় চোখে পড়ার মতো। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির একদম কাছে, এই খেলাটা যেন একতা আর উৎসবের প্রতীক হয়ে ওঠে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এর উন্মাদনাটা দেখার মতো। গ্রামের স্কুল-কলেজের ছেলেরা মিলে দল গঠন করে, নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। এই টুর্নামেন্টগুলো শুধু খেলা নয়, বরং গ্রামের সামাজিক জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি নিজে দেখেছি, কিভাবে একটা ভলিবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রাম আনন্দে মেতে ওঠে। এখানে কোনো বড় স্পন্সর বা টিভি কভারেজ থাকে না, তবুও খেলোয়াড় আর দর্শকদের মধ্যে যে আবেগ আর উত্তেজনা থাকে, তা অনেক পেশাদার খেলার চেয়েও বেশি। ভলিবল ফেডারেশন ১৯৭৩ সাল থেকে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য জাতীয় ভলিবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করে আসছে। তবে আঞ্চলিক খেলাধুলার দিকে আরও বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন।
শীতকালীন উৎসব আর ভলিবল
শীতকালে আমাদের দেশের গ্রামীণ জনপদে ভলিবল এক অন্যরকম আবেদন তৈরি করে। ঠাণ্ডা সন্ধ্যায় যখন ধান কাটার কাজ শেষ হয়, তখন গ্রামের যুবকরা একত্রিত হয় ভলিবলের মাঠে। বাঁশের খুঁটি আর পুরনো জাল দিয়ে তৈরি হয় অস্থায়ী কোর্ট। আমি দেখেছি, কিভাবে সামান্য উপকরণ দিয়ে এত সুন্দর একটা খেলার আয়োজন করা যায়। এখানে খেলার নিয়মকানুন হয়তো আন্তর্জাতিক মানের নাও হতে পারে, কিন্তু খেলার প্রতি তাদের ভালোবাসা আর নিষ্ঠা চোখে পড়ার মতো। এটা শুধু খেলা নয়, এটা তাদের ঐতিহ্যের অংশ, তাদের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম। শীতের এই সময়টায় গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে ভলিবল টুর্নামেন্টগুলো চলে, আর আমি নিজেও সুযোগ পেলে দেখতে যাই সেইসব ম্যাচ। পাহাড়ি এলাকাতেও সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টনসহ খেলাধুলার সরঞ্জাম বিতরণের ফলে তরুণদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।
তারুণ্যের উদ্দীপনা ও ভলিবলের টান
আমার মনে হয়, ভলিবলের এই আঞ্চলিক জনপ্রিয়তার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো এর সহজলভ্যতা আর সম্প্রদায়িক বন্ধন। ফুটবল বা ক্রিকেটের মতো বিশাল মাঠের প্রয়োজন হয় না, খুব বেশি দামি সরঞ্জামেরও দরকার পড়ে না। একটা বল আর একটা জাল হলেই খেলা শুরু করা যায়। আর গ্রামের তরুণরা তো খেলার জন্য যেকোনো সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা শুধু খেলাটা উপভোগ করে না, বরং এর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই তারুণ্যের উদ্দীপনাই ভলিবলকে গ্রামীণ জনপদে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই দিকটা শহরের ছেলেমেয়েদের কাছেও তুলে ধরা উচিত, যাতে তারাও এই সুন্দর খেলার প্রতি আকৃষ্ট হয়।
শহুরে পরিবেশে ভলিবলের টিকে থাকার সংগ্রাম
শহরে ভলিবলের ছবিটা কিন্তু একটু ভিন্ন। এখানে খেলার মাঠের অভাব, আর আধুনিকতার ভিড়ে নতুন প্রজন্মের কাছে ভলিবলের আবেদন যেন কিছুটা ম্লান। আমি নিজেও যখন ছোট ছিলাম, তখন আমাদের পাড়ায় মাঝেমধ্যে ভলিবল খেলা হতো। কিন্তু এখন সেই দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না। ফুটবল আর ক্রিকেট যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকার স্পন্সর পায়, বড় বড় লিগ আয়োজিত হয়, সেখানে ভলিবল যেন অনেকটাই ব্রাত্য। অবশ্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের সভাপতি হওয়ায় আশার আলো দেখা যায়। তবে এটি একটি সমস্যা, কারণ অনেক খেলোয়াড়ই ভলিবল থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে। শহরে ভলিবলকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এর প্রতি নতুন করে আগ্রহ তৈরি করতে হবে, আর তার জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা। আমি মনে করি, এটা শুধু ফেডারেশনের দায়িত্ব নয়, আমাদের সবার দায়িত্ব।
মাঠের অভাব ও আধুনিক খেলার দাপট
শহরে খেলার মাঠের অভাবটা ভলিবলের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের ছেলেবেলায় অন্তত কিছু খোলা জায়গা ছিল, যেখানে আমরা খেলতে পারতাম। এখন তো অ্যাপার্টমেন্ট আর বাণিজ্যিক ভবনের ভিড়ে সবুজ মাঠ খুঁজে পাওয়াই দায়। তাছাড়া, মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের এই যুগে তরুণরা আউটডোর খেলার চেয়ে ইনডোর বা অনলাইন গেমিংয়ে বেশি আগ্রহী হচ্ছে। এই আধুনিক খেলার দাপটের মাঝে ভলিবল তার নিজস্ব জায়গা হারিয়েছে। আমার ছেলেমেয়েকে যখন দেখি ফোন হাতে সময় কাটাতে, তখন মনটা খারাপ হয়ে যায়। ভাবি, যদি তাদেরও আমাদের মতো মাঠে খেলার সুযোগ থাকতো, তাহলে হয়তো তাদের শারীরিক আর মানসিক বিকাশ আরও ভালো হতো।
প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতার সংকট
ফুটবল ও ক্রিকেটের মতো ভলিবল তেমন একটা প্রচার বা পৃষ্ঠপোষকতা পায় না। বড় বড় কোম্পানিগুলো যেখানে ফুটবল-ক্রিকেট টুর্নামেন্টে কোটি কোটি টাকা ঢালে, সেখানে ভলিবলকে কেউ সেভাবে মনে রাখে না। আমি বহুবার দেখেছি, ছোটখাটো ভলিবল টুর্নামেন্টগুলো নিজেদের অর্থায়নে বা স্থানীয় কিছু লোকের সাহায্যে আয়োজিত হয়। এর ফলে ভালো খেলোয়াড়রা উৎসাহিত হয় না, আর নতুন খেলোয়াড়দের আগমনও কমে যায়। আমি বিশ্বাস করি, যদি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়, কিছু কর্পোরেট হাউস যদি এগিয়ে আসে, তাহলে ভলিবলও তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে। নিয়মিত বেতন দাবি করেছে জাতীয় ভলিবল দলের খেলোয়াড়রা।
ভলিবল ফেডারেশনের কাঁধে কঠিন চ্যালেঞ্জ
আমাদের দেশের ভলিবল ফেডারেশনের অবস্থা নিয়ে আমি নিজেও অনেক চিন্তিত। আমি দেখেছি, কিভাবে বিভিন্ন ফেডারেশন সঠিক নেতৃত্বের অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরে। ভলিবল ফেডারেশনও এর ব্যতিক্রম নয় বলে আমার মনে হয়। গত কয়েক বছরে জাতীয় পর্যায়ে তেমন কোনো ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা হয়নি, এমনকি যুব ভলিবল প্রতিযোগিতাও ১৪ বছর ধরে বন্ধ। এটি সত্যিই দুঃখজনক। খেলোয়াড়দের কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে কিভাবে আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভালো খেলোয়াড় পাব?
একটি দেশের খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে হলে তার পরিচালনা পর্ষদের শক্তিশালী হওয়া জরুরি। আমার অভিজ্ঞতা বলে, যেখানে স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা থাকে না, সেখানে উন্নতি আশা করা বৃথা।
নেতৃত্বের সংকট ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব
আমার কাছে মনে হয়, ফেডারেশনের ভেতরে নেতৃত্বের একটা বড় সংকট আছে। সঠিক নেতৃত্ব না থাকলে কোনো সংস্থাই ভালোভাবে চলতে পারে না। এর সাথে যোগ হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব। শুধু যখন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আসে, তখনই বিদেশি কোচ আনা হয়, আর খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটা কোনো টেকসই সমাধান হতে পারে না। আমি নিজের চোখে দেখেছি, কিভাবে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় ঝরে গেছে। খেলোয়াড়দের নিয়মিত বেতন না দেওয়াও একটি উদ্বেগের বিষয়। দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ছায়া
দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার অভিযোগগুলো যখন শুনি, তখন সত্যিই হতাশ লাগে। খেলোয়াড়দের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ যদি সঠিক জায়গায় ব্যবহৃত না হয়, তাহলে তারা কিভাবে উৎসাহিত হবে?
আমি মনে করি, ফেডারেশনের ভেতরে একটা বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। নতুন কমিটি গঠন করে, যারা সত্যিকার অর্থেই খেলার প্রতি আগ্রহী এবং খেলার উন্নয়নে কাজ করতে চায়, তাদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। নইলে আমাদের ভলিবল কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অনুমতি না পাওয়ায় গত বছর এশিয়ান ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ অংশ নিতে পারেনি, যার ফলে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং হারিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা খুবই হতাশাজনক।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভলিবল: স্বপ্ন আর বাস্তবের ফারাক
আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের ভলিবলের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে গেলে মনটা একটু ভারি হয়ে আসে। একটা সময় ছিল যখন আমরা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভালো করতাম, অন্তত দক্ষিণ এশিয়াতে। কিন্তু এখন সেই দিনগুলো যেন অতীত হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের পুরুষ ভলিবল দলের পারফরম্যান্স অনেকটাই হতাশাজনক। যদিও কিছু টুর্নামেন্টে প্রথম দিকে ভালো খেলে আশা জাগায়, শেষ পর্যন্ত তারা সেরা তিনে থাকতে ব্যর্থ হয়। আমি দেখেছি, কিভাবে খেলোয়াড়রা কঠোর পরিশ্রম করে, কিন্তু সঠিক সুযোগ আর প্রস্তুতির অভাবে তাদের স্বপ্ন অধরা থেকে যায়।
র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়া: কারণ ও প্রতিকার
আমাদের দেশের ভলিবল দল আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। এক বছর আগেও আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশনে (এফআইভিবি) ৬৪ নম্বরে ছিল বাংলাদেশ, আর এশিয়ান ভলিবল কনফেডারেশনে (এভিসি) ৪৬ নম্বরে। কিন্তু গত এক বছরে দুটি সংস্থার সব ধরনের র্যাঙ্কিংই হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর প্রধান কারণ হলো আন্তর্জাতিক আসরে নিয়মিত অংশগ্রহণ না করা। আমি বিশ্বাস করি, র্যাঙ্কিং ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের আরও বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে হবে এবং নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। দেশের বাইরের দলগুলোর সাথে খেলে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারব। আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং পুনরুদ্ধারই এখন মূল লক্ষ্য।
আন্তর্জাতিক সাফল্য: অতীত আর ভবিষ্যৎ
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশন গঠিত হলেও, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় ধরনের সাফল্য কালেভদ্রেই এসেছে। দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে আমরা কিছু ব্রোঞ্জপদক পেয়েছি, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন এখনো অধরা। আমার মনে আছে, ২০১৬ সালে এশিয়ান সেন্ট্রাল জোন ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, যা ছিল আমাদের জন্য এক বিশাল অর্জন। কিন্তু এরপর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়নি। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন আমাদের ভলিবল দলও বিশ্বকাপ খেলবে, অলিম্পিকে অংশ নেবে। এটা হয়তো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়, যদি আমরা সবাই মিলে কাজ করি। বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশন ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভলিবলকে জনপ্রিয় করার আমার নিজস্ব ভাবনা
ভলিবলকে আবার জনপ্রিয় করে তুলতে হলে আমার মনে হয়, কিছু নতুন ভাবনা আর উদ্যোগ দরকার। শুধু ফেডারেশনের ওপর সব চাপিয়ে দিলে হবে না, আমাদের নিজেদেরও কিছু করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, যদি আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করি, তাহলে ভলিবল আবার তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে। এই খেলাটি শুধু শারীরিক সুস্থতা নয়, মানসিক বিকাশেও অনেক সহায়ক। তাই একে আবার সবার কাছে পৌঁছে দেওয়াটা জরুরি।
স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ভলিবলের প্রচলন
ছোটবেলা থেকেই যদি ছেলেমেয়েদের ভলিবলের প্রতি আগ্রহী করে তোলা যায়, তাহলে এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ভলিবলকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আমি মনে করি, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ভলিবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা উচিত। বিকেএসপিতেও ভলিবল ক্রীড়া বিভাগ ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করেছে, যা একটি ভালো উদ্যোগ। এর ফলে নতুন খেলোয়াড় তৈরি হবে, আর তারা ভলিবলকে তাদের জীবনের অংশ করে নেবে। আমি নিজে অনেক স্কুলে গিয়েছি, দেখেছি কিভাবে সামান্য উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে।
প্রচার ও বিপণনে আধুনিক কৌশল

আধুনিক যুগে প্রচার আর বিপণন ছাড়া কোনো কিছুই জনপ্রিয় হয় না। ভলিবলের ক্ষেত্রেও এটা সত্যি। সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ব্লগ – এই সব মাধ্যম ব্যবহার করে ভলিবলকে সবার কাছে তুলে ধরতে হবে। আমি মনে করি, ভলিবল ম্যাচগুলোর হাইলাইটস, খেলোয়াড়দের সাক্ষাৎকার, খেলার কৌশল নিয়ে ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে প্রচার করা যেতে পারে। এতে করে তরুণ প্রজন্ম আরও বেশি আকৃষ্ট হবে। এমনকি বিপিএল ক্রিকেটের আদলে পেশাদার ভলিবল লিগ আয়োজনের কথাও বলা হয়েছে, যেখানে দেশ-বিদেশের খেলোয়াড়রা খেলবে। এটি খুবই ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ।
ভলিবলের ভবিষ্যৎ: এক নতুন দিগন্তের হাতছানি
সব চ্যালেঞ্জ আর সমস্যার মধ্যেও আমি ভলিবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। আমি মনে করি, যদি আমরা সঠিক পথে এগোতে পারি, তাহলে ভলিবল অবশ্যই এক নতুন দিগন্তের দেখা পাবে। আমাদের দেশের মানুষের খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসাকে পুঁজি করে ভলিবলকে আবার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা ও সম্মান
খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা আর তাদের সম্মান দেওয়াটা খুবই জরুরি। তাদের নিয়মিত বেতন, ভালো প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত খেলার সুযোগ – এই সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, যদি খেলোয়াড়রা মনে করে যে, এই খেলা তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করবে, তাহলে তারা আরও বেশি উৎসাহিত হবে। তারা যেন ফুটবলারদের মতো ভালো বেতন পায়, সেদিকেও নজর দেওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশন (FIVB) এর সাথে নিবন্ধনকৃত দেশের সংখ্যা ২২১, যা অন্যান্য খেলার চেয়ে বেশি, এবং এটি ভলিবলের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার প্রমাণ।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট বৃদ্ধি
শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, স্থানীয় পর্যায়েও আরও বেশি টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে হবে। আর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। আমি দেখেছি, যখন কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হয়, তখন খেলোয়াড়দের মধ্যে এক অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করে। এই ধরনের অভিজ্ঞতা তাদের আরও উন্নত খেলোয়াড় হতে সাহায্য করে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যদি আমরা এসব দিকে মনোযোগ দিই, তাহলে আমাদের ভলিবল আবার ঘুরে দাঁড়াবে। সেন্ট্রাল জোন ভলিবল অ্যাসোসিয়েশনের (কাভা) আরেকটি টুর্নামেন্ট ঢাকায় শুরু হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে। ভবিষ্যতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভলিবল লিগও আয়োজিত হতে পারে।
| দিক | বর্তমান পরিস্থিতি | উন্নতির ক্ষেত্র |
|---|---|---|
| গ্রামীণ জনপ্রিয়তা | শীতকালে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, সম্প্রদায়িক বন্ধন | সংগঠিত টুর্নামেন্টের অভাব, আধুনিক প্রশিক্ষণের সুযোগ কম |
| শহুরে জনপ্রিয়তা | মাঠের অভাব, অন্যান্য খেলার আধিপত্য, কম প্রচারণা | প্রচারণা বৃদ্ধি, স্কুল-কলেজে প্রচলন, কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতা |
| ফেডারেশনের ভূমিকা | নেতৃত্বের সংকট, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব, দুর্নীতির অভিযোগ | স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, যোগ্য নেতৃত্ব, নিয়মিত টুর্নামেন্ট |
| আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং | পিছিয়ে পড়া, নিয়মিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ না করা | নিয়মিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ, উন্নত প্রশিক্ষণ |
| খেলোয়াড়দের অবস্থা | বেতন ও সুযোগ-সুবিধার অভাব, উৎসাহের অভাব | নিয়মিত বেতন, উন্নত সুযোগ-সুবিধা, পেশাদার লিগ |
글을마치며
বন্ধুরা, ভলিবল নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আর ভাবনাগুলো আজ আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে। আমি বিশ্বাস করি, এই খেলাটির মধ্যে এক অসাধারণ শক্তি আছে যা মানুষকে একত্রিত করতে পারে, বিশেষ করে গ্রামীণ পরিবেশে। শহরের কোলাহলে হয়তো এর আবেদন কিছুটা কমেছে, কিন্তু সঠিক উদ্যোগ আর প্রচারণার মাধ্যমে আমরা এই খেলাটিকে আবার তার হারানো গৌরব ফিরিয়ে দিতে পারি। আমাদের দেশের ভলিবলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, ফেডারেশনের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং অবশ্যই খেলোয়াড়দের প্রতি আমাদের ভালোবাসার ওপর। আশা করি, খুব দ্রুত আমরা দেখব যে, বাংলার প্রতিটি মাঠে ভলিবল আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
알아두면 쓸মো 있는 정보
১. ভলিবল খেলার জন্য বিশাল কোনো মাঠের প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক ছোট জায়গায়, এমনকি বাড়ির উঠোনেও এর অস্থায়ী কোর্ট তৈরি করে খেলা যায়।
২. ভলিবল খেলা শারীরিক সুস্থতার জন্য দারুণ উপকারী। এটি মাংসপেশী মজবুত করে, স্ট্যামিনা বাড়ায় এবং ক্ষিপ্রতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৩. বাংলাদেশে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ভলিবল প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং নতুন খেলোয়াড় তৈরি হবে।
৪. ভলিবল ফেডারেশনকে শক্তিশালী করতে হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। এর মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ কমবে এবং খেলাধুলার প্রকৃত উন্নতি হবে।
৫. আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে ফিরতে এবং ভালো পারফর্ম করতে হলে আমাদের জাতীয় দলকে আরও বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
중요 사항 정리
বন্ধুরা, আমাদের আজকের আলোচনায় ভলিবলের প্রতি গ্রামীণ জনপদের গভীর ভালোবাসার কথা উঠে এসেছে, যা শীতকালে এক উৎসবে রূপ নেয়। কিন্তু শহরের জীবনে খেলার মাঠের অভাব এবং আধুনিক খেলার দাপটে ভলিবলকে টিকে থাকতে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছে। ভলিবল ফেডারেশনের নেতৃত্বের সংকট, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব এবং দুর্নীতির অভিযোগগুলো খেলার অগ্রগতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। তবে আশা হারানো যাবে না! স্কুল-কলেজ পর্যায়ে ভলিবলকে জনপ্রিয় করা, আধুনিক প্রচারণার কৌশল অবলম্বন করা এবং খেলোয়াড়দের জন্য উন্নত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে ভলিবল আবারও তার স্বমহিমায় ফিরে আসবে। আমি নিজে মনে করি, যদি আমরা সবাই মিলে ভলিবলের উন্নয়নে কাজ করি, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের দেশের ভলিবল দল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করতে পারবে। এই খেলাটি শুধু শারীরিক সুস্থতাই নয়, মানসিক বিকাশেও অত্যন্ত সহায়ক, তাই একে আবার সবার কাছে পৌঁছে দেওয়াটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: শহুরে এলাকার তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ভলিবল বেশি জনপ্রিয় কেন?
উ: আমার নিজের চোখে দেখা, গ্রামে গঞ্জে ভলিবলের যে উন্মাদনা, শহরে তা খুঁজে পাওয়াই মুশকিল! এর পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে বলে আমার মনে হয়। প্রথমত, গ্রামের দিকে খেলার মাঠের অভাব নেই বললেই চলে, আর ভলিবল খেলতে খুব বেশি উন্নত সরঞ্জামেরও প্রয়োজন হয় না। একটা সাধারণ নেট আর বল হলেই হলো, ব্যস!
শীতকালে তো আমি দেখেছি পাড়ার মোড়ে মোড়ে, স্কুল মাঠে, এমনকি ধানের ক্ষেতেও ভলিবল নিয়ে মেতে ওঠে সকলে। এই খেলাটা গ্রামের মানুষের কাছে একটা বিনোদনের বড় মাধ্যম, যেখানে সবাই মিলেমিশে একটা সামাজিক বন্ধন তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, শহরে খেলার মাঠের অভাব, আর আধুনিক খেলাধুলার দিকেই ঝোঁক বেশি। ক্রিকেট বা ফুটবলের পেছনে কর্পোরেট বিনিয়োগ যেমন বেশি, তেমনি সেগুলোর প্রচারও অনেক বেশি। তাই নতুন প্রজন্ম শহরে ভলিবল খেলার সুযোগ বা আগ্রহ কোনোটাই তেমন দেখায় না। ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে, গ্রামের সহজ সরল জীবনযাত্রার সাথে ভলিবলের সাদামাটা আকর্ষণটা দারুণভাবে মিশে যায়।
প্র: নতুন প্রজন্মের কাছে কি ভলিবলের আবেদন কমে যাচ্ছে? আর বাংলাদেশের ভলিবল ফেডারেশনের কি ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে?
উ: সত্যি বলতে কি, আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে অন্যান্য খেলার তুলনায় ভলিবলের আবেদন খানিকটা হলেও কমেছে বলে আমার মনে হয়। এখনকার ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোন আর অনলাইনে মজে থাকে, নয়তো ক্রিকেট বা ফুটবলই তাদের প্রধান আকর্ষণ। তবে, একেবারে যে আবেদন হারিয়েছে তা কিন্তু নয়। আমি দেখেছি, কিছু কিছু স্কুল বা কলেজে এখনো ভলিবল টিম বেশ সক্রিয়। চ্যালেঞ্জের কথা বলতে গেলে, আমাদের দেশের ভলিবল ফেডারেশনকে সত্যিই বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। সব থেকে বড় সমস্যা হলো, অর্থের অভাব!
ভালো প্রশিক্ষক, আধুনিক সরঞ্জাম, নিয়মিত অনুশীলন শিবির বা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তা জোগাড় করা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও, তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় উঠে আসার প্রক্রিয়াটাও তেমন শক্তিশালী নয়। অনেক সময় প্রতিভাধর খেলোয়াড়রা সঠিক পরিচর্যার অভাবে হারিয়ে যায়। মিডিয়া কাভারেজও খুব কম, যার ফলে খেলোয়াড়রা পরিচিতি পায় না এবং তাদের মধ্যে পেশাদার ভলিবলার হওয়ার অনুপ্রেরণা কমে যায়।
প্র: ভলিবলের হারানো জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনতে এবং এর আন্তর্জাতিক মান উন্নয়নে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি?
উ: ভলিবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভালো ফল করার জন্য আমাদের বেশ কিছু সুচিন্তিত পদক্ষেপ নিতে হবে। আমার মনে হয়, সবার আগে স্কুল পর্যায় থেকে ভলিবলকে জনপ্রিয় করতে হবে। প্রতিটি স্কুলে ভলিবল খেলার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া, নিয়মিত আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। এতে ছোটবেলা থেকেই শিশুরা এই খেলার প্রতি আগ্রহী হবে এবং নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করা সহজ হবে। দ্বিতীয়ত, ভলিবল ফেডারেশনকে সরকারি এবং বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগী হতে হবে। ভালো মানের জাতীয় লীগ আয়োজন করা, খেলোয়াড়দের জন্য আকর্ষণীয় আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা এবং তাদের পেশাদারিত্ব বাড়ানো জরুরি। আমি বিশ্বাস করি, যদি খেলোয়াড়রা দেখে যে ভলিবল খেলে একটা সম্মানজনক জীবন গড়া সম্ভব, তবে আরও অনেকে এই খেলায় আসতে আগ্রহী হবে। তৃতীয়ত, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ভলিবল খেলার প্রচার বাড়াতে হবে। খেলার হাইলাইটস দেখানো, খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করা যেতে পারে। চতুর্থত, বিদেশি প্রশিক্ষক এনে খেলোয়াড়দের আধুনিক কৌশল শেখানো এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিত করা যেতেলে আমাদের র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি আসবেই আসবে। আমরা সবাই মিলে একটু চেষ্টা করলেই ভলিবলকে আবার তার পুরনো জৌলুসে ফিরিয়ে আনতে পারব, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী






